৬ মাস বয়সী শিশুর খাবার-দাবার। কি খাওয়াবেন? কি খাওয়াবেন না?

আপনার সেদিনের সদ্য জন্ম নেওয়া শিশুটির এখন ৬ মাস পূর্ণ হলো । এতদিন আপনার বাবু বুকের দুধ অথবা ফর্মূলা দুধ এর উপর নির্ভরশীল ছিল। কিন্তু এখন তাকে আস্তে আস্তে শক্ত খাবার দিতে হবে । 

শিশুদের এ বয়সে প্রত্যেক মায়েরই চিন্তা থাকে বাচ্চাকে কিভাবে শক্ত খাবার দিবো, কি দিবো, কতটুকু পরিমাণে দিবো এবং কয় বেলা দিবো । খাবারের ক্ষেত্রে আপনি সাবুদানা, সুজি, ভাত, সবজি অথবা ফলমূল দিতে পারেন । গরুর দুধ ১ বছর আগে না দেওয়াই ভালো কারন সেটা অনেক ক্ষেত্রেই শিশুর হজম করতে কষ্ট হয় ।

খাবার খুবই অল্প পরিসরে আধা চা চামচ-১ চা চামচ, সর্বোচ্চ ২ চা চামচ করে ৭ মাস হওয়া পর্যন্ত দিতে হবে ।

বুকের দুধ অথবা ফর্মূলা দুধ এর পাশাপাশি বাড়তি ১ বেলা করে খাবার দিতে হবে । আপনার শিশু যাতে খাবার হজম করতে পারে সেজন্য পানির সাথে মিশিয়ে হালকা ঘন(পিউরি) করে তৈরি করতে পারেন । 

সবজি, ভাত অথবা আলু ভালোভাবে সিদ্ধ করে, একদম নরম করে পানির সাথে যাতে পুরোপুরি মিশে যায় এভাবে তৈরি করতে পারেন ।

ফলমূল দিতে হলে ভালোভাবে ভর্তা বা ম্যাশ করে দিতে হবে । প্রয়োজন মনে হলে হালকা খাবার পানি‌ মিশাতে পারেন । ফলমূল খাওয়াতে চাইলে কলা, খেজুর, আপেল‌ দিতে পারেন। তবে বেশি এসিডিক বা হজম করতে কষ্ট হয় এধরনের ফল এড়িয়ে যাওয়াই ভালো।‌

দিনে ১-২ বার‌ বা প্রয়োজন বুঝে পানি পান করাতে পারেন; ফিডারে করে অথবা কাপে করে । কাপে করে খাওয়ার অভ্যাস করলে শিশুর দাঁত, মুখ এবং কথার বিকাশে সাহায্য করে।

মনে রাখবেন যে, সব শিশুর হজম করার ক্ষমতা একরকম না । শিশুদের প্রথম অবস্থায় গিলতে কষ্ট হতে পারে, খাবার ফেলে দিতে পারে। এক্ষেত্রে চিন্তার কিছুই নেই । শিশুটিকে আবার খাবার দেওয়ার  চেষ্টা করতে হবে । কয়েক ঘণ্টা অথবা একদিন পর বা কিছুদিন পর, খাবারের পরিমান‌ কিছুটা কমিয়ে দিয়ে দেখতে হবে । 

একই খাবার টানা ৩-৫ দিন দিয়ে দেখতে হবে শিশুটি ঠিকমতো হজম করতে পারছে কি না, এলার্জি হচ্ছে কি না । কোনো ধরনের অসুবিধা বোধ হলে সে খাবারটা আপাতত আর না দেওয়াই ভালো। যদি শিশুটি ঠিকমতো হজম করতে পারে, তাহলে নতুন খাবার দেওয়া যেতে পারে । এভাবেই  খাবার দিয়ে, সময় দিয়ে দেখতে হবে শিশুটি ঠিকমতো সব খাবার গ্রহন করতে পারছে কি না ।

বাইরের খাবার (সেরেল্যাক), অতিরিক্ত তেলজাতীয় খাবার, ভাজাপোড়া খাবার, চর্বিযুক্ত, আঁশ জাতীয় খাবার প্রথম অবস্থায় একেবারেই দেওয়া যাবে না । আর যে কোন প্রয়োজনে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে ।

শেষ করার আগে ছোট্ট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ২টি বিষয় মনে করিয়ে দিতে চাই।

১। শিশুদের জোর করে খাবার একেবারেই খাওয়ানো যাবে না, তাহলে শিশুর খাওয়ার প্রতি অনীহা তৈরি হবে।

২। আপনার বাচ্চা বসে খেতে পারতে পারলে বসা অবস্থায় খাওয়ালেই ভালো । আধ শোয়া অবস্থায় ও খাওয়াতে পারেন, প্রয়োজন বুঝে । তবে শোওয়া অবস্থায় না খাওয়ানোই ভালো।

আশা করি, ৬ মাস বয়সী বাচ্চার শক্ত খাবার খেতে শুরু করার এ সময়ে আমাদের এ ছোটো লেখাটি আপনার ও আপনার বাবুর জীবনকে কিছুটা হলেও সহজ করবে।

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *